ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

গাজা দখলের ইসরায়েলি পরিকল্পনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৮:৫৮ রাত

ছবিঃ সংগ্রহীত

ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখলের পরিকল্পনায় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পুরো গাজা উপত্যকার সামরিক নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার মাত্র একদিন পর এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। আন্তর্জাতিক মহলের মতে, এই পরিকল্পনা মানবিক বিপর্যয়কে আরও গভীর করবে, বাড়াবে মৃত্যু ও খাদ্য সংকট। তীব্র সমালোচনা সত্ত্বেও তেল আবিব এখনও পিছু হটার কোনো লক্ষণ দেখায়নি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফলকার তুর্ক একে আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতের (আইসিজে) রায়ের পরিপন্থি আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানান। তাঁর মতে, এই উদ্যোগ ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে গুরুতরভাবে ক্ষুণ্ন করবে।

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট কার্যালয় পরিকল্পনাটিকে ‘অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, এটি গণহত্যা, অবরোধ এবং অনাহারের ধারাবাহিকতা। হামাস সতর্ক করে জানিয়েছে, এ ধরনের পদক্ষেপ গাজায় আটক জিম্মিদের জীবনকে আরও বিপদের মুখে ফেলবে।

তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একে ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ উল্লেখ করে তাৎক্ষণিকভাবে পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানান।

চীন বলেছে, গাজা ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ইসরায়েলকে বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ মের্ৎস ঘোষণা দিয়েছেন, গাজায় ব্যবহারযোগ্য কোনো সামরিক সরঞ্জাম আপাতত ইসরায়েলে রপ্তানি অনুমোদন করা হবে না।

সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিয়া মালমার স্টেনেরগার্ডের মতে, এই সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতি অর্জনকে আরও কঠিন করে তুলবে এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করবে। অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়ং স্থায়ী বাস্তুচ্যুতিকে আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি উল্লেখ করে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন।

ফিনল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলিনা ভালতোনেন সতর্ক করেছেন, এই পরিস্থিতি গাজায় দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ পরিকল্পনাটিকে ‘নিধনযুদ্ধের নতুন অধ্যায়’ আখ্যা দিয়ে আরব ও পশ্চিমা দেশগুলোকে পদক্ষেপ ঠেকানোর আহ্বান জানিয়েছে।

নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাসপার ফেল্ডক্যাম্প বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত মানবিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করবে এবং জিম্মি মুক্তিতে কোনো সহায়তা দেবে না। ইসরায়েলের বিরোধী নেতা ইয়ায়ির লাপিদ একে ‘প্রজন্মের জন্য বিপর্যয়’ উল্লেখ করে অভিযোগ করেছেন, নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীর পরামর্শ উপেক্ষা করে কট্টর ডানপন্থিদের চাপে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Link copied!