ঢাকা শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই আন্দোলন: শিক্ষাখাতে মৌলিক সংস্কারের অভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৮ আগস্ট, ২০২৫, ০৯:২৯ রাত

এক বছরের অন্তর্বর্তী সরকারেও শিক্ষাক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন দেখা যায়নি। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের চেষ্টা করলেও শিক্ষা খাতে তা স্বচ্ছ নয়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কিছু দাবি-দাওয়া পূরণের পদক্ষেপ নেয়া হলেও শিক্ষাঙ্গনে বছরের অধিকাংশ সময় অস্থিরতা বিরাজ করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদ দখল ও সহকারী শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগের ঘটনা ঘটতে থাকে। যারা রাজি হননি, তাদের নির্যাতন, অপমান, এমনকি বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় জোরপূর্বক পদত্যাগ ও হেনস্থার বিরুদ্ধে নির্দেশনা জারি করেছিল, পরিস্থিতি আগের মতোই অচল ছিল।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এই ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের নির্দেশ দিলেও বাস্তবে অনেক শিক্ষককে জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হয় এবং তাদের বেতন-ভাতা বন্ধের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বেতন অব্যাহত রাখার নির্দেশ দেওয়া হলেও এখনও অনেক শিক্ষক বেতন পাচ্ছেন না, কেউ কেউ এমপিওভুক্ত হলেও কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, উচ্চশিক্ষায় প্রশাসনিক শৃঙ্খলা কম, তবে তিন মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধানে কাজ শুরু হবে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তনের পাশাপাশি, স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে এমপিওভুক্তির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করা হয়েছে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের জন্য।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের বেতন স্কেল দশম গ্রেডে উন্নীত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রাথমিকের শূন্য প্রায় ৩৪ হাজার প্রধান শিক্ষকের পদ দ্রুত পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স স্তরের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষককে এমপিওভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা ঘোষণা করা হয়েছে।

বৃত্তি পরীক্ষাও পুনরায় চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তবে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষকদের অসন্তোষ রয়েছে।

২০২৭ থেকে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম কার্যক্রমে আসবে, যা ধাপে ধাপে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সাতটি সরকারি কলেজের সংযুক্তি নিশ্চিত হয়েছে এবং ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনের কাজ চলছে, যদিও এখনও খসড়া চূড়ান্ত হয়নি।

Link copied!