ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

মো. ফাহাদের পরিচালনায় গিট্টু ভাই

বিনোদন প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০১:১২ দুপুর

মো. ফাহাদের পরিচালনায় গিট্টু ভাই

গ্রামের সহজ-সরল চেহারার আড়ালে লুকিয়ে থাকা এক জটিল মনস্তত্ত্বের গল্প নিয়ে নির্মিত হয়েছে বিশেষ নাটক ‘গিট্টু ভাই’।নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা তারিক স্বপন ও আঁখি চৌধুরী।  অর্পনা রানী রাজবংশীর রচনা ও চিত্রনাট্যে নাটকটি পরিচালনায় করেছেন মো. ফাহাদ। এছাড়া নাকটিতে আরো যারা অভিনয় করেছেন- কাজী রাজু, সাহেলা আক্তার, ফরিদ হোসাইন, ফাহামিদা রহমান তৃষা, প্রমুখ।

নাটকটি প্রসঙ্গে নির্মাতা মো. ফাহাদ বলেন- “আমাদের সমাজের আশেপাশে এমন অনেক মানুষ আছে যারা দুমুখো সাপের মতো এক পরিবারের সাথে আরেক পরিবারের সম্পর্ক ধ্বংস করে দিচ্ছে। আমরা মানুষের বর্তমান দেখে বিচার করি, কিন্তু তার অতীত বা পেছনের কারণ খুঁজি না। একটা মানুষ কেন এমন হলো, তার সেই অতীতটা জেনে বিচার করা উচিত—এটাই এই নাটকের মূল বার্তা।”

নাট্যকার অর্পনা রানী রাজবংশী বলেন- গিট্টু মনির আসলে এক প্রকার সাইকোপ্যাথ। কিন্তু তার আচরণের পেছনে রয়েছে এক করুণ অতীত। ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর সৎ মায়ের কাছে অনাদরে বেড়ে ওঠা এই যুবক কখনো ভালোবাসার স্পর্শ পায়নি। সৎ মায়ের শাসন আর বঞ্চনা তাকে ধীরে ধীরে ভালোবাসা-বঞ্চিত এক অস্থির মানুষে পরিণত করেছে। হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে সে অন্যের ক্ষতি করেই নিজের আনন্দ খোঁজে।

গল্পে দেখা যায়- মনির গ্রামের মানুষের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ বা ‘গিট্টু’ লাগানোই যার প্রধান কাজ ও নেশা। তার দিনই কাটে না যদি গ্রামের কারো না কারো মধ্যে ঝগড়া না লাগাতে পারে। পেটের ভাত হজম করার জন্য হলেও সে প্রতিদিন নতুন নতুন ফন্দি আঁটে। মা-ছেলে, বাবা-ছেলে কিংবা শাশুড়ি-বউ—এমন কোনো সম্পর্ক নেই যেখানে সে বিষবাষ্প ছড়ায় না। 
চায়ের দোকানকে সে ব্যবহার করে ‘জাতীয় রেডিও’ হিসেবে। সেখানে বসে সে অত্যন্ত চতুরতার সাথে গ্রামের ভাবি কিংবা প্রবাসীদের স্ত্রীদের নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট গল্প ছড়ায়। তার এই হিউমার বা গুজব এক কান থেকে আরেক কানে ছড়িয়ে পুরো গ্রামে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে দেয়।

গল্পের শেষটা বেশ আবেঘন ও করুণ। গ্রামের মানুষের অতিষ্ঠ হয়ে যখন গিট্টু মনিরকে গ্রামছাড়া করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন সে সবার কাছে ক্ষমা চায়। গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে সে কেবল একটি শেষ ইচ্ছা প্রকাশ করে—মায়ের কবর জিয়ারত করা। ভালোবাসার কাঙাল এক যুবকের এই করুণ পরিণতির মধ্য দিয়েই শেষ হয় ‘গিট্টু ভাই’র গল্প।

 

Link copied!